লিখিত পরীক্ষা এলে আমরা যে রকম কোমর বেঁধে প্রস্ত্ততি নেই, কত কী করি, ভাইভার জন্যে অতটা করি না। আসলে মৌখিক পরীক্ষা ও লিখিত পরীক্ষার ধরন ভিন্ন, টেকনিক ভিন্ন, ভালো করার কলা-কৌশলও ভিন্ন। এবং দুটো পরীক্ষাই গুরুত্বপূর্ণ। আর একজন সফল ছাত্র লিখিত পরীক্ষাকে যেমন গুরুত্ব দেন, তেমনি মৌখিক পরীক্ষাকেও গুরুত্ব দেন। দুটো পরীক্ষা ভালো দেয়ার মধ্য দিয়ে ভালো রেজাল্ট করেন।
মৌখিক পরীক্ষা বা ভাইভাকে বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রীই ভয় পায়। এজন্যে অনেক সময় প্রস্ত্ততি থাকলেও পারফরমেন্স খারাপ হয়। অনেকের থিউরি পরীক্ষা ভালো হয়, কিন্তু মৌখিক পরীক্ষায় ভালো করতে পারে না। দেখা যায় মৌখিক পরীক্ষা দিয়ে বের হচ্ছে কাঁদতে কাঁদতে। আবার কারো কারো কাছে মৌখিক পরীক্ষা কোনো পরীক্ষাই না! একটা ড্যামকেয়ার ভাব থাকে তাদের মধ্যে। খুব ভয় পাওয়া আর ড্যামকেয়ার ভাব থাকা-দুটোর কোনোটাই সঠিক নয়। তাই মৌখিক পরীক্ষার ব্যাপারে সবার দৃষ্টিভঙ্গিটা গুছিয়ে নেয়ার জন্যে তিনি বলেন, লিখিত পরীক্ষা যেমন ভাঁপা পিঠা খাওয়ার মতো আনন্দের, তেমনি মৌখিক পরীক্ষাও আমাদের জীবনে পুলি পিঠা খাওয়ার মতো আনন্দদায়ক ঘটনা।
মৌখিক পরীক্ষা মানেটা কী?
মৌখিক পরীক্ষার ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘Vivavoce’ যার adjective form হচ্ছে Vivacious’. এর অর্থই হচ্ছে প্রাণবন্ত, আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বসম্পন্ন হওয়া বা উপস্থাপন করা। সুতরাং এ পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর ব্যক্তিত্ব উপস্থিত বুদ্ধি রুচি জ্ঞান ভদ্রতাবোধ পোশাক পরিচ্ছন্নতা স্মার্টনেস কথা বলার ভঙ্গি আচার-আচরণ-এ সবকিছু যাচাই করা হয়।
ভাইভা বোর্ডে পাঠ্য বই থেকে যতটা না জিজ্ঞেস করা হয়, তারচেয়ে বেশি খেয়াল করা হয় বাকি বিষয়গুলো। এজন্যে প্রস্ত্তত থাকতে হবে সব দিক থেকে।
মৌখিক পরীক্ষার জন্যে এই প্রস্ত্ততিকে ভাগ করা যেতে পারে দুটি ভাগে-
মৌখিক পরীক্ষার জন্যে এই প্রস্ত্ততিকে ভাগ করা যেতে পারে দুটি ভাগে-
1. পড়ালেখার প্রস্ত্ততি
2. অন্যান্য প্রস্ত্ততি
2. অন্যান্য প্রস্ত্ততি
এই অন্যান্য প্রস্ত্ততিরও কয়েকটি ধাপ আছে। প্রথমেই আসবে পড়ালেখার প্রস্ত্ততি।
1. মৌখিক পরীক্ষার জন্যে পড়ালেখার প্রস্তুতি
সাধারণত মৌখিক পরীক্ষার আগে থিউরি পরীক্ষা হয়ে যাওয়ায় আলাদা করে মৌখিক পরীক্ষার জন্য পড়তে বসতে হয় না। তাছাড়া মৌখিক পরীক্ষার আগের ২/৩ দিন সময়ে সব বিষয় পড়াও সম্ভব নয়।
ভাইভাতে প্রত্যেক বিষয় বা কোর্স সম্পর্কে conceptual প্রশ্ন করা হয়। তাই Conceptual বিষয়গুলো রিভাইজ করা এবং মেডিটেটিভ লেভেলে প্রত্যেকটা কোর্সের Conceptual বিষয়গুলো ভিজুয়ালাইজ করা।
ভাইভাতে যে প্রশ্নগুলো করা হয়, তা হলো কোনো থিউরির এপ্লিকেশন কী ধরনের। যেমন, নিউটনের মাধ্যাকর্ষণ সূত্রের প্রয়োগ। যখন ছাত্রছাত্রীরা conceptual বিষয়বস্ত্ত পারে না, তখন সংজ্ঞা, পার্থক্য এসব প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হয়।
তবে ভালো প্রস্ত্ততির জন্যে আরো কয়েকটি পয়েন্ট আছে-
• যদি প্রতি বছরের শেষে ভাইভা হয়, তাহলে সে বছরের কোর্সগুলো রিভাইজ করা।
• চার বছর পরে অনার্স বা বিবিএ-র শেষে যে ভাইভা হয়, তখন চার বছরের গুরুত্বপূর্ণ কোর্সগুলোর কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ রিভাইজ করা।
• আগে থেকে খোঁজ নিয়ে জানার চেষ্টা করা যে, ভাইভা বোর্ডে কারা কারা চেয়ার করবেন, তখন যে বিষয়ের বিশেষজ্ঞ, সেগুলো নিয়ে একটু পড়াশোনা করে যাওয়া। অথবা সেই স্যার বা ম্যাডাম যদি এর আগে কোনো কোর্স পড়িয়ে থাকেন তাহলে সে কোর্সগুলো নিয়ে ভালোভাবে পড়ে যাওয়া।
• চার বছর পরে অনার্স বা বিবিএ-র শেষে যে ভাইভা হয়, তখন চার বছরের গুরুত্বপূর্ণ কোর্সগুলোর কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ রিভাইজ করা।
• আগে থেকে খোঁজ নিয়ে জানার চেষ্টা করা যে, ভাইভা বোর্ডে কারা কারা চেয়ার করবেন, তখন যে বিষয়ের বিশেষজ্ঞ, সেগুলো নিয়ে একটু পড়াশোনা করে যাওয়া। অথবা সেই স্যার বা ম্যাডাম যদি এর আগে কোনো কোর্স পড়িয়ে থাকেন তাহলে সে কোর্সগুলো নিয়ে ভালোভাবে পড়ে যাওয়া।
2. মৌখিক পরীক্ষার জন্যে অন্যান্য প্রস্ত্ততি
ক)শারীরিক-মানসিকভাবে ফিট থাকুন
ভাইভাতে কেঁদে ফেললে, অসুস্থ হলে কিংবা অসুস্থতার ভান করলে শিক্ষকরা বিরক্ত হয়ে থাকেন। অনেক ছাত্রছাত্রী ভাইভাতে ঢুকে বলে তার মাথা ঘুরছে, কিছু পারে না, বমি আসছে, অসুস্থ ছিলো। এগুলো বলে আসলে খুব লাভ হয় না। পরীক্ষক কখনোই একজন পরীক্ষার্থীর ওপর সহানুভীতিশীল হন না এসব ক্ষেত্রে। তখন শিক্ষকরা তাকে একটা পাশ মার্কস দিয়ে বিদায় করে দেন।
শারীরিক-মানসিকভাবে ফিট থাকার জন্যে সেই মুহূর্তে কোনো আনন্দের স্মৃতিকে মনে করা যেতে পারে বা কয়েকবার আনন্দ-আনন্দ-আনন্দ বলা যেতে পারে। আর অটোসাজেশন দেয়া-সুস্থ দেহ, প্রশান্ত মন, কর্মব্যস্ত সুখী জীবন তো আমরা দিতেই পারি।
খ)ইতিবাচক হোন
মৌখিক পরীক্ষার ব্যাপারে অবশ্যই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করতে হবে। কারণ আমরা জানি যে, বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের চিন্তার প্রতিফলন। তাই ‘আমি মৌখিক পরীক্ষায় ভালো করতে পারবো’-এই দৃষ্টিভঙ্গি একজন পরীক্ষার্থীকে ভাইভার পুরো সময়ে প্রশান্ত থাকতে এবং ভালো করতে সাহায্য করবে।
গ)ভাইভা বোর্ডের পরীক্ষকদের মৌটিভ বুঝতে চেষ্টা করুন
পরীক্ষক যারা আছেন তারা কী জানতে চাইছেন এটা বুঝতে হবে। এজন্যে অফিস সহকারী বা কোনো সোর্স থেকে আগেই খোঁজ নিতে হবে যে, কারা কারা থাকতে পারেন। কারণ, মৌখিক পরীক্ষার ধরন পরীক্ষকের মন-মেজাজ, ইচ্ছা-অনিচ্ছা ও মর্জির ওপর নির্ভরশীল। কেউ কিছুটা রাগী হতে পারেন, আবার কেউ নরম। এখন আপনাকে সেই সময়টুকুতে এই ব্যক্তিদের মন জয় করতে হবে। আর মন জয় করার সহজ উপায় হচ্ছে পরীক্ষককে নিজের সবচেয়ে বড় শুভাকাঙ্ক্ষী মনে করা। তাই কমান্ড সেন্টারে তাদেরকে নিয়ে এসে কথা বলুন, নিজের জন্যে এবং তাদের জন্যেও দোয়া করুন।
ঘ)কিছু কিছু বিষয় নীতিগতভাবে অনুসরণে সচেষ্ট থাকুন
• তার মধ্যে প্রথমেই আসে ড্রেস-আপ মানে পোশাক-আশাক। বলাই হয়, আগে দর্শনধারী, তারপরে গুণবিচারী। শালীন পোশাক পরিধান করা উচিত। ছেলে হোক কিংবা মেয়ে-সবার জন্যেই এটা সমানভাবে প্রযোজ্য।
মেয়ে হলে সালোয়ার-কামিজ (মিডিয়াম সাইজের, ফুল স্লিভ, বড় ওড়না পিন-আপ করা। হাই হিল না পড়ে মিডিয়াম বা ফ্ল্যাট পরা। শব্দ হয় এমন জুতো না পরা।) কেউ চাইলে শাড়ি পরেও যেতে পারেন। মেক-আপটা যেন চোখে না পড়ে।
ছেলে হলে ফরমাল ড্রেস। ফুল স্লিভ শার্ট, প্যান্ট (অবশ্য জিন্সের নয়), শার্ট ইন করে পরা, টাই থাকলে ভালো। শীতকাল হলে সুট-কোট পরা যাবে, তবে গ্রীষ্মকালে অবশ্যই নয়। আর সহপাঠীর জামা না পরা। আসলে আপনার যা আছে, তা নিয়েই আপনাকে বাস্তবতা ফেস করা উচিত, ধার করা কিছু দিয়ে ফুটানি করা ঠিক নয়।
• শিক্ষককে তোষামোদ করা যাবে না। শিক্ষকের পড়ানো ছাত্রছাত্রীর যতই ভালো লাগুক ভাইভা বোর্ডে সেটা শিক্ষককে বলা যাবে না।
• অতিরিক্ত স্মার্ট হওয়ার চেষ্টা করা উচিত নয়। অনেক সময় ছাত্রছাত্রীরা ভাইভার রুমে ঢুকেই গুড মর্নিং বা গুড আফটারনুন এসব বলে স্মার্টনেস দেখাতে শুরু করে। এটা না করে ভদ্রভাবে সালাম দেয়া উচিত। স্লামাইকুম নয়, আসসালামু আলাইকুম বলে।
মৌখিক পরীক্ষার আরো কিছু জরুরি প্রসঙ্গ-
মৌখিক পরীক্ষায় প্রশ্নের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীর সাহস, আত্মবিশ্বাস বা তাৎক্ষণিক বুদ্ধি খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করতে চান শিক্ষকরা। বুদ্ধিমত্তা ও প্রতুৎপন্নমতিত্ব থাকলে এই পরীক্ষায় ভালো করা যাবে।
1. উত্তর দেওয়ার সময় এমন কোনো বিষয়ভিত্তিক শব্দ বা টার্ম ব্যবহার করা উচিত নয়, যার সম্পর্কে পরীক্ষার্থীর সঠিক ধারণা নাই। কেননা ভাইভা বোর্ড এর সদস্যগণ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে প্রশ্ন করে তাদেরকে আটকানোর চেষ্টা করে থাকেন। এমনভাবে উত্তর দিতে হবে যেন আপনার কথার সূত্র ধরে টিচার পরের প্রশ্নটি করেন।
2. বুঝতে বা শুনতে অসুবিধা হলে ‘হুঁ’ বা ‘অ্যাঁ’ জাতীয় শব্দ না করে বলা-‘জ্বী’ বা ‘দয়া করে আবার বলুন’। ইংরেজিতে বললে ‘সরি’ বলা।
3. মৌখিক পরীক্ষার সকল প্রশ্নের উত্তর দেয়া সম্ভব না-ও হতে পারে। এটা বাস্তবতা। তাই মন খারাপ না করা।
4. কোনো প্রশ্নের উত্তর জানা না থাকলে সেটা সঙ্গে সঙ্গে বিনীতভাবে স্বীকার করে নেয়া। না-জানা বা মনে পড়ছে না-এ রকম প্রশ্নের উত্তর আন্দাজে বলা ঠিক নয়। উত্তর জানা না থাকলে বিনয়ের সাথে বলা, ‘আমি জানি না বা আমি বলতে পারছি না, সরি।’ তখন হয়তো শিক্ষকরা অন্য প্রশ্ন করবেন।
5. প্রশ্নকর্তা ইংরেজিতে প্রশ্ন করলে উত্তর ইংরেজিতে দেয়ার চেষ্টা করা। আবার তিনি যখন বাংলায় প্রশ্ন করবেন তখন বাংলায়-ই উত্তর দেয়া।
6. দেশীয় রাজনীতির প্রসঙ্গ এলে নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করতে হবে। কোনো দলকে সমর্থন করা ঠিক হবে না।
7. অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্নে বিব্রতবোধ না করা। যেমন-একবার ভাইভাতে শিক্ষক বললেন যে, তোমার মোবাইল নম্বর লিখ। ছেলেটি মোবাইল নম্বর লেখার পর শিক্ষক তখন বললেন যে, এখান থেকে গাণিতিক গড় এবং জ্যামিতিক গড় বের কর। এ ধরনের প্রশ্ন তো কোথাও লেখা থাকে না। তাই এসব ক্ষেত্রে না ঘাবড়ে গিয়ে ঠান্ডা মাথায় যতটা পারা যায়, ততটা করার চেষ্টা থাকা উচিত।
2. বুঝতে বা শুনতে অসুবিধা হলে ‘হুঁ’ বা ‘অ্যাঁ’ জাতীয় শব্দ না করে বলা-‘জ্বী’ বা ‘দয়া করে আবার বলুন’। ইংরেজিতে বললে ‘সরি’ বলা।
3. মৌখিক পরীক্ষার সকল প্রশ্নের উত্তর দেয়া সম্ভব না-ও হতে পারে। এটা বাস্তবতা। তাই মন খারাপ না করা।
4. কোনো প্রশ্নের উত্তর জানা না থাকলে সেটা সঙ্গে সঙ্গে বিনীতভাবে স্বীকার করে নেয়া। না-জানা বা মনে পড়ছে না-এ রকম প্রশ্নের উত্তর আন্দাজে বলা ঠিক নয়। উত্তর জানা না থাকলে বিনয়ের সাথে বলা, ‘আমি জানি না বা আমি বলতে পারছি না, সরি।’ তখন হয়তো শিক্ষকরা অন্য প্রশ্ন করবেন।
5. প্রশ্নকর্তা ইংরেজিতে প্রশ্ন করলে উত্তর ইংরেজিতে দেয়ার চেষ্টা করা। আবার তিনি যখন বাংলায় প্রশ্ন করবেন তখন বাংলায়-ই উত্তর দেয়া।
6. দেশীয় রাজনীতির প্রসঙ্গ এলে নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করতে হবে। কোনো দলকে সমর্থন করা ঠিক হবে না।
7. অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্নে বিব্রতবোধ না করা। যেমন-একবার ভাইভাতে শিক্ষক বললেন যে, তোমার মোবাইল নম্বর লিখ। ছেলেটি মোবাইল নম্বর লেখার পর শিক্ষক তখন বললেন যে, এখান থেকে গাণিতিক গড় এবং জ্যামিতিক গড় বের কর। এ ধরনের প্রশ্ন তো কোথাও লেখা থাকে না। তাই এসব ক্ষেত্রে না ঘাবড়ে গিয়ে ঠান্ডা মাথায় যতটা পারা যায়, ততটা করার চেষ্টা থাকা উচিত।
ভাইভা ভালো না হওয়ার কারণ-
• কোনো প্রস্ত্ততিও না নেয়া
একবার একটি ছেলে ভাইভা পরীক্ষা দিতে আসছে না। পরে তাকে বিভাগীয় শিক্ষক ফোন করলেন। যা জানলেন তা হলো-লিখিত পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ছেলেটি খুশিতে ১০ জন বন্ধু-বান্ধবসহ রাস্তার পাশে কোনো এক জায়গা থেকে খিচুড়ি খেয়েছে। তারপর রাত থেকে তার পেট খারাপ এবং সে ১৬ বার টয়লেট করেছে। এরপর তাকে ধরে ধরে বন্ধুরা ভাইভা পরীক্ষার জায়গায় নিয়ে আসে। আসলে ছেলেটির কাছে ভাইভার চেয়ে খিচুড়ি বেশি গুরুত্ব পেয়েছে।
একবার একটি ছেলে ভাইভা পরীক্ষা দিতে আসছে না। পরে তাকে বিভাগীয় শিক্ষক ফোন করলেন। যা জানলেন তা হলো-লিখিত পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ছেলেটি খুশিতে ১০ জন বন্ধু-বান্ধবসহ রাস্তার পাশে কোনো এক জায়গা থেকে খিচুড়ি খেয়েছে। তারপর রাত থেকে তার পেট খারাপ এবং সে ১৬ বার টয়লেট করেছে। এরপর তাকে ধরে ধরে বন্ধুরা ভাইভা পরীক্ষার জায়গায় নিয়ে আসে। আসলে ছেলেটির কাছে ভাইভার চেয়ে খিচুড়ি বেশি গুরুত্ব পেয়েছে।
• লিখিত পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর অন্যান্য কাজে জড়িয়ে যাওয়া
ভাইভাতে একটি ছেলে একেবারেই কিছু পারছিলো না। তাকে অপশন দেয়া হলো যে সে যেটা পারবে, সেখান থেকেই প্রশ্ন করা হবে। সে অপশনও দিতে পারছে না। পরে তাকে জিজ্ঞেস করা হলো যে, সে কেন ভাইভাতে কিছু পারছে না। তখন সে বললো যে লিখিত পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর থেকে সে মিটিং-মিছিল নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, রাতে ঘুমায় না তিন দিন। তাই এখন আর তার মাথা কাজ করছে না।
• আবার কেউ কেউ ভাইভা দিয়ে কতক্ষণে বন্ধু, আড্ডা, গানে মেতে উঠবে সেই সুযোগের অপেক্ষায় থাকে।
ভাইভাতে ভালো না করতে পারার কারণ ব্যাখ্যা করে মুরশীদা খানম তার আলোচনা শেষ করেন।
মৌখিক পরীক্ষায় একজন প্রার্থীর যদি প্রশ্নের সঠিক ও সাজানো গুছানো উত্তর দিতে পারেন তাহলে পরীক্ষকের মনে প্রার্থী সম্পর্কে আস্থার ভাব চলে আসে। সেইসাথে মার্জিত আচরণ যদি থাকে তাহলে সোনায় সোহাগা। আসলে প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেয়াটাই বড় কথা নয়; বরং বোর্ডকে সন্তুষ্ট করতে পারাই আসল কথা।
মৌখিক পরীক্ষায় একজন পরীক্ষক যা দেখেন তা হচ্ছে একজন পরীক্ষার্থী-
- কতটা বিনয়ী?
- কতটা আত্মবিশ্বাসী? এবং
- কতটা পরিস্থিতিকে সামলে নিতে পারছে?
- কতটা আত্মবিশ্বাসী? এবং
- কতটা পরিস্থিতিকে সামলে নিতে পারছে?
মৌখিক পরীক্ষায় ভাইভা বোর্ডকে সন্তুষ্ট করার উপায়-
▪ লিখিত পরীক্ষায় কোনো দর্শক থাকে না। দুই/ চার জন গার্ড দেন। কিন্তু ভাইভা বোর্ডে মিনিমাম ২ জন থাকেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে চার জন থাকেন, তারা পাঁচ/১০ মিনিট ভেতরে যিনি পরীক্ষা দেন পুরোটা সময় তার প্রতি দৃষ্টি, মনোযোগ দেন, তাকিয়ে থাকেন। নার্ভাস করে দেয়ার জন্যে তাদের এই স্থির দৃষ্টিই যথেষ্ট।
তবে নার্ভাস হওয়ার কিছু নেই। শুধু ভাইভা রুমকে নিজের বাসা মনে করুন। ভাইভা বোর্ডকে মনে করেন নিজের ফ্যামিলি মিটিং। স্যারকে বাবা বা বড় ভাই, ম্যাডামকে মা বা বড় বোন মনে করেন।
▪ সেইসাথে অন্তত সাত দিন আগে থেকে অবলোকন করতে পারেন এভাবে যে, ভাইভা পরীক্ষার দিন আপনি দরজা আলতো করে খুলে সালাম দিচ্ছেন, বসতে বললে বসছেন। এক এক করে সবার দিকে তাকাচ্ছেন (অপলক দৃষ্টিতে নয়)। টিচাররা যা জিজ্ঞেস করছেন তা এমনভাবে উত্তর দিচ্ছেন যে আপনার উত্তরের সূত্র ধরে পরের প্রশ্ন করছেন যেটি আপনার জানা।
▪ মৌখিক পরীক্ষায় যেহেতু মুখের কাজ, মানে কথার কাজ। এজন্যে সবসময় কথাশিল্পকে চর্চা করতে হবে। এটা একদিনে হবে না। একবার ভাইভাতে একটি ছেলে কিছুই পারছিলো না। তাকে ভাইভা বোর্ডের শিক্ষকরা বললেন যে, তুমি কী কী পড়ে এসেছ। সে উত্তর করেছিলো, ‘স্যার আমি পইড়া আইতে পারি নাই।’ কয়জন টিচার এটা মেনে নেবেন? তাই সাবধান হতে হবে।
1. স্মার্টলি সোজা হয়ে ঢুকতে হবে।
2. ঢোকার সময় কী বলতে হবে-আমি কি ভিতরে আসতে পারি/ May I come in Sir/ Madam?
3. বসতে বললে-মেরুদন্ড সোজা করে বসা, হাত কোলের উপর রাখা, পা নাড়ানো, নখ কামড়ানো এগুলো করা যাবে না।
4. কথা বলার সময় হাতের মুভমেন্ট দৃষ্টিকটু কিছু করা যাবে না।
5. শুধু কলম ও প্রবেশপত্র সাথে নিয়ে প্রবেশ করা।
6. ভাইভা শেষে উঠে যাওয়ার সময় সালাম দিয়ে বিনয়ের সাথে বিদায় নিতে উঠে যাওয়া।
3. বসতে বললে-মেরুদন্ড সোজা করে বসা, হাত কোলের উপর রাখা, পা নাড়ানো, নখ কামড়ানো এগুলো করা যাবে না।
4. কথা বলার সময় হাতের মুভমেন্ট দৃষ্টিকটু কিছু করা যাবে না।
5. শুধু কলম ও প্রবেশপত্র সাথে নিয়ে প্রবেশ করা।
6. ভাইভা শেষে উঠে যাওয়ার সময় সালাম দিয়ে বিনয়ের সাথে বিদায় নিতে উঠে যাওয়া।
কয়েকটি অনুশীলনী-
1. পরীক্ষার কমপক্ষে সাত দিন আগে থেকে অটোসাজেশন চর্চা শুরু করা।
2. কথা বলায় জড়তা দূর করার জন্যে বেশি বেশি স্বরায়ন অনুশীলন করা।
3. প্রার্থনা করা। নিয়মিত মূসা (আ)-এর প্রার্থনাটি করা যেতে পারে-আমার কণ্ঠের জড়তা দূর করে দাও যেন সবাই আমার কথা বুঝতে পারে।
7. নার্ভাসনেস দূর করার জন্যে পরীক্ষা দিতে যাবার আগে শিথিলায়ন মেডিটেশন করলে ভালো।
8. ভাইভা দিতে প্রবেশ করার পূর্বে আল্লাহকে মনে করা।
2. কথা বলায় জড়তা দূর করার জন্যে বেশি বেশি স্বরায়ন অনুশীলন করা।
3. প্রার্থনা করা। নিয়মিত মূসা (আ)-এর প্রার্থনাটি করা যেতে পারে-আমার কণ্ঠের জড়তা দূর করে দাও যেন সবাই আমার কথা বুঝতে পারে।
7. নার্ভাসনেস দূর করার জন্যে পরীক্ষা দিতে যাবার আগে শিথিলায়ন মেডিটেশন করলে ভালো।
8. ভাইভা দিতে প্রবেশ করার পূর্বে আল্লাহকে মনে করা।
ভাইভা পরীক্ষার জন্যেও প্রস্ত্ততি নিতে হবে। কেননা ভাইভা বোর্ডে স্যার বা ম্যাডাম আমাদের জন্যেই অপেক্ষা করছেন। অর্থাৎ আমরা তাদের কাছে প্রত্যাশিত।
ভাইয়া,
ReplyDeleteআপনার এই পোস্ট টি আমার খুবই উপকার করেছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
মহি উদ্দিন
Auto Quotes