ইউডা-তে ফার্মেসি পড়া শুরু করলাম। এমন কোন দিন নেই যেদিন শুনতে হয়নি যে - কেন আমি ওখানে ভর্তি হলাম। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি, তাও আবার খুব একটা টাকাওয়ালা ইউনিভার্সিটিও না। চাকরি পাবোনা, কিছু শিখতে পারবো না। জীবনে কিছুই আর হবেনা। কান দিলাম না। কিন্তু মন তো ঠিকই খারাপ হতো। শুরু থেকেই নিজের মত করে পড়তে লাগলাম, চলতে থাকলো সম্পর্ক - আমি, নীলক্ষেত আর ক্লাস। শেষ বছরটিতে চিন্তা করলাম ভিন্ন কিছু করতে হবে, নইলে অন্যদের চাইতে এগিয়ে যাওয়া যাবেনা। আমার বন্ধুদের দেখলাম জিআরই পড়ে চলে গেছে অ্যামেরিকাতে। মাথায় এটা নিয়ে ভাবতে শুরু করলাম। ইউনিভার্সিটিতে খোঁজ নিয়ে দেখলাম কেউ জিআরই দেয় নাই এর আগে। তার মানে কারো কাছে কোন সাহায্য পাওয়া যাবেনা। একটু একটু ঘাটাঘাটি শুরু করলাম; কিন্তু শেষ বছরের কোন সময়ই কাজে লাগাতে পারলাম না। শেষ হলো অনার্স। ইন্টার্ন করলাম।
.
কিছুদিন জিআরই ভোকাবুলারি পড়ে ভয় পেয়ে গেলাম। ১ মাস পড়াশোনা থেকে বিচ্ছিন্ন প্রায়। আমার এক প্রিয় বন্ধুও চলে গেলো অ্যামেরিকা এর মধ্যে। ও চলে যাবার দিন কেন জানি নিজেকে ছোট মনে হলো। খুব খারাপ লাগতো বেশ কয়েকদিন। এতো কিছু পড়লাম এখন কিছু শব্দ মুখুস্ত করতে পারবো না !! আবার টেবিলে ফিরে গেলাম, মনে হলো নিজের মাঝে হারানো শক্তি খুজে পাওয়া দরকার, আমি ফুরিয়ে যাইনি সেটা জানানোও দরকার। শুরু করলাম পড়া। ক্লাস করতাম জিআরই সেন্টারে।
.
ভোকাবুলারি পড়লাম ৪ হাজার, তারপর আরও পড়লাম। ভাবতাম - পড়া হবে না মানে! হতেই হবে। সব পড়ে ফেলব যা আছে। মনে আছে, কিছুদিন চোখে লালবাতি দেখতাম খালি; কারন ডিকশনারিতে A আর B দিয়ে যত শব্দ আছে সব পড়ে ফেলেছিলাম। ঐটার সাইড ইফেক্ট হয়েছিল আর কি !!! তারপর থেকে এতো না পড়ে শুধু জিআরই শব্দগুলো পড়েছিলাম। এতো শব্দ না পড়লেও হয় যদিও; আমি জেদ থেকে একটু বেশী পড়েছিলাম আসলে। ৬ মাসের জিআরই প্রস্তুতিতে মানুষের চাকরি পাওয়া দেখেছি, বিদেশ যাওয়া দেখেছি, গাড়ির সামনে দাড়িয়ে তোলা ছবি দেখেছি, দেখেছি অনেক বিয়ের ছবি।
.
কিন্তু আমার দিন যেত জিআরই আর মানুষের কথা শুনে শুনে। কান তো দেই নি !! শেষটা দেখে নিব ! জি আর ই দিলাম, টোফেল দিলাম, জি আর ই সেন্টারে ক্লাস নেয়া শুরু করলাম, ইউডা-তে শিক্ষকতা শুরু করলাম, ব্যাপন-এ কাজ করা শুরু করলাম, তারপর আমেরিকান সেন্টার আর ইএমকে সেন্টার অফ অ্যামেরিকান এম্বাসি'র জিআরই, টোফেলের ইন্সট্রাক্টর হিসেবে কাজ করলাম।
শিক্ষা নিজের কাছে। নিজেকে যে শেখাতে পারেনা, তাকে কেউই কিছু শেখাতে পারেনা।
জীবন কি থেমে গিয়েছিলো? স্বপ্নগুলো কি হারিয়ে গিয়েছিলো? মানুষ এক এক সময় এক এক অবস্থার মদ্ধ দিয়ে যায়, ভালো অথবা খারাপ; কিন্তু প্রত্যেকটি অবস্থাতেই ভালো কিছুর চেষ্টা করলে সামনের অবস্থা গুলো ভালো হতে থাকে। চেষ্টা থামিয়ে দিতে নেই। জীবনের জুদ্ধ একবার না বার বার হয়; একবার হারলে পরের বার জিতবো, না হলে পরের বার, না হলে পরের বার; জিততেই হবে।ইচ্ছে যখন মনের মধ্যে থাকে আমি জানি আমি অপ্রতিরুদ্ধ, পৃথিবীর সব অনিচ্ছা এ জুদ্ধে পরাজিত।
No comments:
Post a Comment